রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর জীবন যাপন কেমন ছিলেন

তিনি বলেন, আমরা একদিন আবু হুরায়রা (রাঃ)-এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। তখন তার দেহে দুটি কাতানের কাপড় (অর্থাৎ একটি কাতানের চাদর ও একটি লুঙ্গি) শোভা পাচ্ছিল। আবু হুরায়রা (রাঃ) তার একটি দ্বারা নাক পরিস্কার করছিলেন। তখন তিনি বলে উঠলেন। বাহ, বাহ আবু হুরায়রা কাতানের কাপড় দ্বারা নাক পরিস্কার করছ! অথচ এক সময় এমন ছিল যখন আমি নিজে রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর মিম্বর এবং আয়েশা (রাঃ) এর হুজরার পার্শ্বে পেটের জ্বালায় কাতর হয়ে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতাম। প্রায় আগন্তুকই আমাকে মৃগী রোগী মনে করে গর্দানে পা দ্বারা আঘাত করত। প্রকৃতপক্ষে আমার মধ্যে উন্মাদনার লেশমাত্র ছিল না, বরং প্রচণ্ড ক্ষুধার জ্বালাতেই আমার এ অবস্থা হতো। [৫৮]

রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর জীবন যাপন কেমন ছিলেন

ব্যাখ্যা : রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর জীবনী গ্রন্থে আবু হুরায়রা (রাঃ) এর ঘটনা বর্ণনার কারণ হলো, তিনি রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর একনিষ্ঠ খাদেম ছিলেন। আবু হুরায়রা (রাঃ) ছিলেন আসহাবে সুফফার একজন সদস্য। তারা এর মেহমান ছিলেন। আর মেহমানের অবস্থা থেকে মেযবানের অবস্থা নির্ণয় করা যায়। অর্থাৎ মেহমান যেহেতু খাবারের জন্য কষ্ট করছেন এতে সহজেই অনুমান করা যায় যে, মেযবান তথা নবী (সঃ) এর ঘরে তখন পর্যাপ্ত খাবার ছিল না।
আবু হুরায়রা (রাঃ) উক্ত হাদীসে তার ইসলাম গ্রহণের পর প্রাথমিক সময়ের অবস্থা এবং পরবর্তী অবস্থার মধ্যে পার্থক্য করেছেন। এটা রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর ইন্তেকালের পরের ঘটনা।

[৫৮] সহীহ বুখারী, হা/৭৩২৪।

তিনি তৃপ্তি সহকারে রুটি এবং গোশত ভক্ষণ করেননি

মালিক ইবনে ডিনার (রাঃ) থেকে বর্ণিত

তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (সঃ) কখনো ‘যাফাফ’ ছাড়া তৃপ্তি সহকারে রুটি এবং গোশত ভক্ষণ করেন নি। মালিক ইবনে দীনার (রাঃ) বলেন, আমি এক বেদুইন কে জিজ্ঞেস করি, ‘যাফাফ’ কী? সে বলল, মানুষের সাথে একত্রে পানাহার করা। ৫৯
ব্যাখ্যা : যখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর ঘরে মেহমান আগমন করত তখন মেহমানের সাথে খাওয়ার সময় পেট পূর্ণ করে খেতেন। যাতে মেহমান ক্ষুধা রেখে তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ না করে।

[১] মুসনাদে আহমাদ, হা/১৩৮৮৬; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হা/৩১০৮; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৬৩৫৯।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *