বাবাকে নিয়ে ছড়া কবিতা
বাবাকে নিয়ে ছড়া কবিতা
সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ । পিতা এবং পিতৃত্বের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের লক্ষ্যে বাবা দিবসের উৎপত্তি । বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে জুন মাসের তৃতীয় রবিবার পালিত হয় বাবা দিবস। বাবার প্রতি বিশ্বাস,ভালোবাসা ও সম্মান সর্বদা অন্তরে থাকলে কোন দিবস পালন করার দরকার হতো না। কিন্তু ইদানীং মানুষের মানবিক গুণ হারিয়ে যাচ্ছে। পিতার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে না। তাই প্রতি বছর বাবা দিবস পালন করে সবাইকে সতর্ক করা হয়। সন্তান হিসেবে পিতার প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্যের নমুনা উম্মোচন করা হয়। অতএব বাবা দিবসে সকল বাবার প্রতি সকলের সম্মান জানানো উচিত ।
বাবা দিবসের ছড়া কবিতাঃ
শরিফ আহমাদ
ঘাম ঝরানো পরিশ্রমে
ক্রমে ক্রমে-
খাবার আনেন যিনি,
জন্মদাতা আমার বাবা তিনি ।
নিত্য ভোরে জেগে ওঠেন
কাজে ছোটেন-
রাতে আসেন ফিরে,
সুখের প্রদীপ জ্বলে ওঠে নীড়ে ।
ছুটির দিনে থাকেন ঘরে
আদর করে-
গল্প শোনান কত,
কেউ হবে না আমার বাবার মত ।
বাবার ছবি যত্নে আঁকা
বুকে রাখা-
তিনিই ভালোবাসা,
জীবন যুদ্ধে দেখান আলো-আশা ।
আমার বাবা
শরিফ আহমাদ
আমার বাবা আমার কাবা
আমার শিক্ষাগুরু
তার নিকটে শুরু–
আরবী বাংলা আর ইংরেজী পড়া
তার দেখানো পথে জীবন গড়া ।
বাবার সাথে বাইরে যাওয়া
খাবার খাওয়া–
নাম না জানা কত,
আমার বাবা আমার বন্ধুর মত ।
আমার সাথে গল্প করেন
করেন কথা শেয়ার,
কাজের সময় কাজ করে যান
সকাল দুপুর সাঁঝ করে যান
আবার করেন পেয়ার।
আমার বাবা আদর্শবান লোক
আমার বাবা দীর্ঘজীবী হোক ।
বাবার স্মরণে ছড়া কবিতাঃ
শুধু বাবার অভাব
শরিফ আহমাদ
আমি যখন ছোট্ট ছিলাম
যুবক তখন বাবা
রুখে বিপদ থাবা–
সংসারে সুখ আনেন,
আমার বাবা আদর্শবান
অনেক কিছু জানেন ।
বাবার কাছে হাঁটতে শিখি
শিখি কথা বলা
দীনের পথে চলা–
বাবার চোখে দেখি প্রথম বিশ্ব
হৃদয় ছোঁয়া দৃশ্য ।
শৈশবের মাঠ পেরোই যখন
বাবা গেলেন চলে
ভাসি চোখের জলে–
যাই এগিয়ে তবু ,
আত্মীয় সব পর হয়ে যায়
সহায় থাকেন প্রভু ।
কর্ম জীবন শুরু করি
আসে সুখের আলো
সবকিছু হয় ভালো–
সংসারে আজ সবাই যেন নবাব
শুধু বাবার অভাব ।
মা বাবাকে নিয়ে ছড়া কবিতাঃ
ছোট্ট পরী
শরিফ আহমাদ
একটা পরী হাসছে মায়ের কোলে
আগামীর সুখ মৃদু হাওয়ায় দোলে ৷
মায়ের কাছে শিখছে চলাফেরা-
মা সন্তানের বিদ্যালয় এক সেরা ৷
গ্রামের মানুষ আসছে সবাই
করছে ভীষণ আদর
মেঘের মতোই মাথার উপর
হাজার স্নেহের চাদর ৷
বাবা-মায়ের মন খুশিতে নাচ্ছে
আকাশের চাঁদ ঘরে যেন পাচ্ছে ৷
কাটছে সময় তাকে ঘিরে
মিষ্টি আলাপ করে
এমন পরী করছে বিরাজ
বাংলার ঘরে ঘরে ৷
বাবা তোমায় ভালোবাসি
শরিফ আহমাদ
আমার অনেক ভালো লাগে
তোমার মুখের হাসি,
বাবা তোমায় বড় ভালোবাসি ।
তোমার সাথে গল্প করে
ইসলামী গান অল্প করে
পাই অফুরান সুখ,
তোমার মত বাবা পেয়ে
গর্বে ভরে বুক ।
তোমার সাথে খাওয়া দাওয়া
তোমার সাথে বাইরে যাওয়া
যায় আনন্দে দিন,
ত্রিভুবনে শোধ হবে না
বাবা তোমার ঋণ ।
দীর্ঘ হায়াত পাবে তুমি
নিত্য করি দোয়া,
সারা জনম দিও আদর-ছোঁয়া।
মায়ের ছড়া
শরিফ আহমাদ
চোখের পাতায় ঘুম নামে না
মা হয়ে যান অস্থির
আমরা হলাম নি:শ্ব মানুষ
বাসিন্দা এক বস্তির ৷
বাবা কোথায় চলে গেছেন
কোথায় করেন কারবার
মায়ের কাছে পাইনি জবাব
প্রশ্ন করে বার বার ৷
মা আমাকে খাওয়ান পড়ান
নিজে করেন কষ্ট
কী ছিলেন কী হয়ে গেছেন
বুঝতে পারি পষ্ট ৷
ঘরে কোন ল্যাপ তোষক নেই
শীতে উঠি কেঁপে
আঁচল দিয়ে ঢেকে আমায়
ধরেন তিনি চেপে ৷
রাত জেগে ঘুম পাড়ান আমায়
সুখে রাখার জন্য
কেউ হবে না মায়ের মতো
চিরকালের গণ্য ৷
মধুর মতো লাগে
শরিফ আহমাদ
বাবা আমার জন্মদাতা
বাবা আমার সাথী
আঁধার ঘরের বাতি ।
বাবার ভালোবাসা নিয়ে
যাই এগিয়ে আমি
সোনা দানার চেয়ে আমি
বাবার কাছে দামী ।
বাবা আমায় গল্প শোনান
বলেন কত ছড়া
ধরেন ক্লাসের পড়া ।
একটু বিপদ-আপদ হলে
পাই বাবাকে আগে
বাবার মুখে নামটি আমার
মধুর মতো লাগে ।
বাবা ও মেয়ে নিয়ে কবিতাঃ
মায়ার বাঁধন
শরিফ আহমাদ
মেয়ের নাম সুরাইয়া নওশীন
তাকে নিয়ে সময় কাটে
আমার সারাদিন।
জমে খেলার আসর
বসাই কথার হাট
ছড়ার ট্রেনে পার হয়ে যায়
প্রাথমিক সব পাঠ।
মেয়ের মুখে হাসি
স্বপ্ন রাশি রাশি
ঝটপটে তার কথায় যেন
বাজে সুরের বাঁশি।
চাঁদের চেয়ে উজ্জ্বল তার কি মায়াময় মুখ
অর্পিত তার জন্য আমার কান্না এবং সুখ।
মেয়ের কণ্ঠে- বাবা তুমি
বাবার সেরা বাবা
মা আমার জায়নামাজ
এবং তুমি ভালোবাসার কাবা।
ঘরের বাইরে গেলে তুমি
ভাল্লাগে না আর
হয় না সময় পার।
বাবা মেয়ের এ খুনসুটি
দেখে আরেকজনে
চোখ পাকিয়ে চেয়ে থাকে
কি ভাবে কি মনে?
আবার বাঁকা ঠোঁটে হেসে
কাজে মারে ডুব
পাকা নাকি খুব !
মানুষটি নয় দূরের অন্য কেউ
ঘাম ঝরিয়ে কাজ করে সে কত
পুষে রাখে বুকের আবেগ ঢেউ
ঘরেই থাকে লক্ষী নারীর মত।
বাবা মেয়ের ভালোবাসা
স্বপ্ন এবং আলো আসা
চির অমর হোক
মায়ার বাঁধন বড় বাঁধন
হয় নাতো বিয়োগ।
বাবা হওয়ার কবিতাঃ
বিয়ে
শরিফ আহমাদ
সামর্থ্যবান লোকের উপর
বিয়ে করা ফরজ
ঠিক সময়ে চাষ না হলে
যায় শুকিয়ে বরজ
মাতাপিতার থাকতে হবে গরজ ৷
বিয়ে হলেই বাচ্চা হয় না
প্রভুর ইচ্ছা লাগে
নিঃসন্তান হাজার লোকের
শোক বেদনা জাগে
চালাক মানুষ প্রভুর রহম মাগে ৷
বিয়ের পরে ঈমান বাড়ে
জীবন সুখে ভরা
হোক না ছেলে কিংবা মেয়ে
যায় না কিছু করা
মেয়ের দ্বারাই উদ্ভাসিত ধরা ৷
প্রিয় পাঠকবৃন্দ । উপরোক্ত ছড়া কবিতাগুলো আপনাদের কেমন লেগেছে ? কমেন্ট করে জানাবেন। লেখককে উৎসাহিত করবেন। যেন তিনি নিয়মিত আপনাদের জন্য কাজ করে যেতে পারেন। ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন। আমাদের সাইটের সঙ্গে থাকুন।
[…] বাবাকে নিয়ে ছড়া কবিতা । শরিফ আহমাদ […]