বাংলাতে বায়োডাটা লেখার নিয়ম

হ্যালো প্রিয় ভিজিটর আশা করি আপনারা সকলে ভালো আছেন। আপনাদেরকে আবারো আমাদের সাইটে আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক স্বাগতম জানাই। আজকের পোস্ট এ আমি আপনাদের সাথে বায়োডাটা লেখার নিয়ম এই বিষয় টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। তো চলুন দেরি না করে পোস্ট টি শুরু করা যাক।

 

বায়োডাটা এর মাধ্যমে একজন চাকুরী প্রত্যাশী ব্যক্তি নিজেকে যে কোম্পানীতে চাকুরী করতে চায় সেটা আকর্ষণীয় ভাবে উপস্থাপন করে। অনেক সময় কিন্তু যাদের যথেষ্ট যোগ্যতা আছে কাজের তারপরেও বায়োডাটা কে আকর্ষণীয় করতে না পারার জন্য অনেকেই চাকরি থেকে রিজেক্ট হয়ে যায়। এর মূল কারণ হলো বায়োডাটা লিখতে ব্যার্থ হওয়া।

এর জন্য আজকের পোস্ট এ সেই সকল ব্যক্তি যারা বায়ো‌ডাটা লিখতে পারেন না তাদের জন্য সাজানো হয়েছে। আজকের পোস্ট টি পড়লে আপনারা খুব সহজেই বায়োডাটা লিখার সঠিক একটি ধারণা পাবেন।

বায়োডাটা কী?
বায়োডাটা কী?

বায়ো‌ডাটা কী

একটি জিনিস সম্পর্কে লিখতে হলে আগে জানতে হবে সেই জিনিস টি আসলে কী। ধরুন আপনি “ফেসবুক” নিয়ে লিখতে চান, এখন যদি না জানেন এই ফেসবুক আসলে কী তাহলে আপনি কী লিখবেন? তেমনি যদি বায়োডাটা কী সেটা না জানেন তাহলে বায়ো‌ডাটা লিখতেও পারবেন না। তাই আগে জানতে হবে বায়োডাটা কী?

বায়ো শব্দের অর্থ হলো জীবন আর ডাটা মানে হলো বৃত্তান্ত। আর বায়ো‌ডাটা হলো নিজের জীবন বৃত্তান্ত। বায়োডাটা মূলত একটি ইংরেজি শব্দ। বায়ো‌ডাটা লিখতে মূলত নিজের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, পাবলিক পরিক্ষার ফলাফল ইত্যাদি লিখতে হয়।

এগুলো মূলত লিখা হয় কোম্পানীকে নিজের সম্পর্কে জানানোর জন্য৷ এতে একজন ব্যক্তি কোম্পানী তে না যেয়েই নিজের সম্পর্কে অন্যদের জানাতে পারে।

 

বায়োডাটা লিখার নিয়ম

বায়ো‌ডাটা লিখার জন্য অবশ্যই কিছু জিনিস সম্পর্কে অবগত হতে হবে। নিম্নে বায়োডাটা লিখার সময় যে বিষয় গুলোর খেয়াল রাখতে হবে তা জানানো হলোঃ

 

গুছিয়ে লেখা

বর্তমানে কোনো কোম্পানী বায়োডাটাকে খুব বেশি একটা সময় ধরে দেখে না। তারা একটি বায়ো‌ডাটা দেখার জন্য ৩০-৬০ সেকেন্ড সময় নেয়। তাই বায়োডাটা লিখার সময় অবশ্যই সহজেই পড়া যায় এমন শব্দ ব্যবহার করুন এবং সেটাকে গুছিয়ে ও সুন্দর করে লিখার চেষ্টা করবেন।

 

পৃষ্ঠা

বায়োডা‌টা সব সময় মাত্র ২ পেজে লিখতে হবে। একটি পেজে আপনি কোথা থেকে জানতে পেরেছেন এই চাকরি এর জন্য যায়গা আছে আর আপনি এই চাকরি এর জন্য প্রত্যাশী সে সম্পর্কে ছোট করে একটি চিঠি লিখুন। এবং ওপর পেজে নিজের জীবন বৃত্তান্ত লিখবেন।

আরো পড়ুনঃ গেম খেলে টাকা আয় করার নিয়ম 2022

অনলাইনে বায়োডাটা লিখলে

অনেক সময় অনেকে ইমেইল এ বায়োডাটা পাঠায়। তবে এই উপায় অবলম্বন করলে আপনি বায়োডা‌টা লিখার সময় প্রয়োজনীয় যায়গা কে বোল্ড, ইটালিক কিংবা আন্ডারলাইন করতে পারবেন।

 

বানান ভূল বা কাটাকাটি

বায়ো‌ডাটা লিখার সময় বানানে ভূল করবেন না এবং কাটাকাটি ও করবেন না। প্রয়োজনে বার বার লিখুন, তাও এই ভূল গুলো করবেন না।

এগুলো ছিলো শুধুমাত্র কয়েকটি নিয়ম। তবে বায়োডাটা লিখার সময় গুরুত্বপূর্ণ কিছু জিনিস আছে যা না লিখলে সেটা বায়োডা‌টা ই হবে না। তাই নিচের জিনিস গুলো লিখতে ভুলবেন না।

 

শিরোনাম

বায়ো‌ডাটা লিখার পূর্বে খেয়াল রাখবেন যে, একদম প্রথমে লিখবেন জীবন বৃত্তান্ত এবং সেটাকে আন্ডারলাইন করে দিবেন। এর পরেই সেখানে আপনার নাম দিবেন। এরপর সেখানে আপনার ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার এবং একটি একটিভ ইমেইল দিবেন। পরবর্তীতে কোনো ফোন আসলে আপনার ওই নাম্বারে আসবে কিংবা ইমেইল এ মেইল আসলে সেই মেইলে যাবে।

 

সারসংক্ষেপ

এই অংশে আপনি আপনার অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা কে ফুটিয়ে তুলবেন। আপনি যদি এর আগে কোনো প্রতিষ্ঠান এ কাজ করেন তাহলে সেই প্রতিষ্ঠানের কোনো সফল কাজ যেটায় আপনি শামিল ছিলেন সেটা তুলে ধরতে পারেন।

 

ক্যারিয়ারের লক্ষ

এই অংশ টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। এই অংশে আপনরা এই চাকরি পেয়ে কি লক্ষ পূরণ করতে চান সেই ইচ্ছা টি তুলে ধরবেন। তবে মিথ্যা কিছু লিখবেন না।

 

শিক্ষাগত যোগ্যতা

আমি আগেই বলছে আবার বলছি, শিক্ষাগত যোগ্যতা জীবন বৃত্তান্ত এ দেওয়া আবশ্যক। এই অংশে আপনি নিজের জীবনে কী কী সাফল্য পেয়েছেন সব তুলে ধরবেন। এটা না দিলে আপনার বায়ো‌‌ডাটা কখনো পূরণ হবে না। শিক্ষাগত যোগ্যতা দেওয়ার সময় যে বিষয় গুলো দেওয়া আবশ্যক তা নিচে বলা হলোঃ

•ডিগ্রির নাম (উদাহরণস্বরূপ : SSC,HSC, MA etc.)
•কোর্স সময়কাল
•শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
•বোর্ডের নাম
•পাশের বছর
•ফলাফল

এই সব কিছু নিয়ম মাফিক লিখবেন। এবং ডিগ্রি গুলো প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত লিখবেন। তবে আপনার যদি কোনো ডিগ্রি এর ফলাফল এখনো পাওয়া না হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই সেখানে “Appeared” এই কথাটি উল্লেখ করবেন। আর যদি কোনো কোর্স সেই সময় করতে থাকেন তাহলে লিখবেন

 

অতিরিক্ত তথ্য

এই অংশে নিচের বলা তথ্য গুলো দিয়ে দিবেনঃ

•পেশাগত অর্জন
•ভাষাগত দক্ষতা
•কম্পিউটার দক্ষতা
•আইটি দক্ষতা
•পুরস্কার/ অর্জন/ সম্মাননা
•বিবিধ কর্মকাণ্ড

 

ব্যক্তিগত তথ্য

এই অংশে আপনি আপনার পিতার নাম, মাতার নাম, স্থায়ী ঠিকানা, বর্তমান ঠিকানা, বয়স, ইত্যাদি তথ্য দিয়ে পরিপূর্ণ করবেন।

 

রেফারেন্স

এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, তবে এই অংশে নিজের আত্নীয় স্বজনদের নাম দিলে হবে না। এখানে আপনি কর্ম জীবন বা চাকরী জীবনে পরিচিত লাভ করেছেন এবং সম্মানীয় ব্যক্তিদের নাম দিবেন। তবে যার নাম দিবেন সেই ব্যক্তিকে এই বিষয়ে অবশ্যই জানাবেন।

আর এখানে আপনি একজন নয় বরং কয়েকজনের নাম দিতে পারেন। তবে যাদের নাম দিবেন তাদের নাম, মোবাইল নাম্বার, ইমেইল, ঠিকানা দিতে হবে।

 

এই নিয়ম মেনে বায়োডা‌‌টা লিখলে অবশ্যই আপনার বায়োডা‌টা আকর্ষনীয় একটি বায়োডাটা হবে।

 

তো প্রিয় ভিজিটর আশা করছি আপনাদের কাছে আজকের এই পোস্ট টি ভালো লেগেছে। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কিন্তু কমেন্ট করে জানাবেন। এবং আমাদের সাইটে এরকম আরো অনেক হেল্পফুল পোস্ট রয়েছে সেগুলো পড়তে চাইলে আমাদের সাইট টি একবার ভিজিট করুন। আর আজকের মতো এখানেই বিদায়, ভালো থাকবেন সুস্থ্য থাকবেন।

5 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *