হ্যালো প্রিয় ভিজিটর আশা করি আপনারা সকলে ভালো আছেন। আপনাদেরকে আবারো আমাদের সাইটে আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক স্বাগতম জানাই। আজকের পোস্ট এ আমি আপনাদের সাথে নষ্ট ফেসবুক আইডি রিকভার করার বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা করবো। তো আর দেরি না করে চলুন পোস্ট টি শুরু করা যাক।
ফেসবুক এখন পৃথিবীর সব থেকে বেশি জনপ্রিয় একটি সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম তা নিশ্চয়ই সকলেরই জানা আছে। ফেসবুক ব্যবহার করে না এমন মানুষ খুজে পাওয়া বেশ মুশকিলের একটি ব্যাপার। আমেরিকা, বাংলাদেশ, ভারত, চীনের মতো দেশ গুলোর বৃহৎ জনসংখ্যার জন্য এই ফেসবুক এর ব্যবহার বেড়েই চলছে।
আর এরই সাথে সাথে ফেসবুক আইডি গুলোর মধ্য থেকে ফেক আইডি এর সংখ্যাও পেড়ে চলছে। যার কারণে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন অগণিত ফেসবুক আইডি ডিজেবল করে থাকে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এর এরকম কাজের জন্য মাঝে মাঝে আমাদের সাধের ফেসবুক আইডি ও ডিজেবল হয়ে যায়। অবশ্য এর জন্য আমারাও কিছুটা দায়ী।
আমরা না জেনে আবার অনেকে জেনেও ফেসবুক এর নানা রুলস ভঙ্গ করি। যেমনঃ বার বার স্প্যাম করি, নানা ওয়েব সাইটের লিংক পোস্ট কমেন্ট করি, অন্যদের পছন্দ নয় এমন পোস্ট করি ইত্যাদি আরো কত কি!। যার জন্য আমাদের ফেসবুক আইডি ও এই ডিজেবল আইডি এর লিস্টে পড়ে যায়।
তো আপনার ফেসবুক আইডি ও যদি ডিজেবল হয়ে যায় তাহলে চিন্তার কোনো কারণ নেই, আজকের পোস্ট পড়ে আপনারা ডিজেবল ফেসবুক আইডি ব্যক আনতে পারবেন।
যদিও ফেসবুক আইডি ডিজেবল হয়ে গেলে তা ফিরিয়ে আনা বেশ মুশকিলের একটি কাজ। কারণ এটা ২০২২ সাল, আর সালের পরিবর্তনের সাথে সাথেই ফেসবুক ও নিজেকে আপডেট করে নিয়েছে। যার ফলে এখন যদি ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আপনার ফেসবুক আইডি তে সামান্যতম সন্দেহজনক কিছু দেখে সাথে সাথে তখন আইডি টি ডিজেবল করে দেয়।
আর এর জন্য অনেকের ফেসবুক আইডি ফেক না হওয়ার পরেও আসল আইডি ডিজেবল হয়ে যায়। এবং নিজের সেই ডিজেবল আইডি কে ব্যক করতে তাদের নানা সমস্যায় পড়তে হয়। তবে ফেসবুক আইডি কে যেভাবে ডিজেবল করে, তেমনি সেটা কে ফেরত আনার জন্যও কিছু উপায় রেখেছেন। আমরা সেগুলো নিয়ে আলোচনা করবো একটু পড়ে। আপনারা শুধু আমার বলা স্টেপ গুলো ফলো করবেন।
ফেসবুক আইডি কেন ডিজেবল হয়
আমি কিন্তু শুরুতেই আপনাদের বলে দিয়েছি যে, ফেসবুক হচ্ছে সব থেকে বড় সোশ্যাল নেটওয়ার্ক। ফেসবুক নানা কারণে আমাদের ফেসবুক আইডি ডিজেবল করে, নিম্নে আমরা সেগুলো নিয়ে কথা বলবো।
যে কারণে ফেসবুক আইডি ডিজেবল করে দেয়ঃ
১. ১৮+ জনিত কারণেঃ
অনেকেই ফেসবুকে ১৮+ ধরণে পোস্ট করে থাকে, বিশেষ করে ফেক আইডি গুলো বেশি করে করে। ফেসবুক এটাযে এলাও করে না। তাই এই কারণে আইডি ডিজেবল হয়।
২. সহিংসতাঃ
অনেকে হিংসার বসে ফেসবুকে অন্যকে অনেক খারাপ কিছু বলে, এটাকে ফেসবুক এলাও করে না।
৩. হয়রানি
অনেকে আছেন যারা ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে অন্যকে হয়রানি করায়, সেটা যে কোনো রকমের হয়রানি হতে পারে। এরকম কিছু ফেসবুক সন্দেহ করলে আইডি ডিসেবল করে দেয়।
৪. নিজের ক্ষতি করা
অনেকে আছেন যারা ফেসবুকে হাত কাটার ছবি, ভিডিও কিংবা লাইভ এ এসে এসব করে, এই সব কিছু পেলে ফেসবুক সাথে সাথে সেই আইডি ডিজেবল করে দেয়।
৫. মিথ্যা তথ্য
যেসব আইডি থেকে মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হয় সেই আইডি গুলো ডিজেবল করা হয়।
আরো পড়ুনঃ সেরা ৫ টি অনলাইন ব্যবসা
৬. স্প্যাম
ফেসবুকে কোনো ধরণের স্প্যাম করলে আইডি লিমিট কিংবা ডিজেবল করা হয়।
৭. অননুমোদিত বিক্রয়
যারা ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে অনুমোদিত নয় এমন কিছু যেমনঃ ড্রাগস, পশু-পাখি, অস্ত্র ইত্যাদি বিক্রি বা পাচার করে সেই আইডি গুলো নষ্ট করে দেওয়া হয়।
৮. অকথ্য বাক্য
কোনো ফেসবুক আইডি যদি নিজের কোনো স্ট্যাটাসে অকথ্য বাক্য কোনো মানুষ, জীব-যন্তু, কিংবা রাষ্ট্রীয় কোনো কিছুর বিরুদ্ধে বলে তাহলে অনেক কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়।
৯. সন্ত্রাসবাদ
কোনো ফেসবুক আইডি এর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ এর কোনো সন্দেহজনক কিছু পেলে ফেসবুক সেই আইডি ডিজেবল করে দেয় এবং পুলিশ কে খবর দেয়।
১০. অন্য কারণ
এমন অনেক কারণ থাকতে পারে যা অন্যদের পছন্দ না তাও আপনি সেগুলো করেন। এমন কিছু এর বিরুদ্ধে যদি কয়েকটি ফেসবুক আইড থেকে একটি ফেসবুক আইডি রিপোর্ট যায় তাহলে সেই আইডি ডিজেবল এবং একেবারে ডিলিট করে দেওয়া হয়।
এতক্ষণ আপনারা জানলেন কেন ফেসবুক আইডি ডিজেবল করে দেওয়া হয়। এখন জেনে নিন কিভাবে ডিজেবল ফেসবুক আইডি ব্যক আনবেন।
যেভাবে ডিজেবল ফেসবুক আইডি ব্যাক আনবেন
যদি আপনার কোনো ফেসবুক আইডি ডিজেবল হয়ে যায় তবে আপনার আইডি তে লগ ইন করলে “Your Id Has Been Disabled” এরকম একটি লেখা আসবে। তো এরকম আসলে ভয় পাবেন না। নিচের আমার বলা উপায় অনুসরণ করুন ইনশাআল্লাহ ফেসবুক আইডি ব্যাক আনতে পারবেন।
ডিজেবল ফেসবুক আইডি ব্যাক আনতে নিচের নিয়ম অনুসরণ করুনঃ
১. প্রথমে যে ডিজেবল আইডি ব্যাক আনবেন সেই আইডি এর ইমেইল/ফোন নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে আপনার ফোনের ফেসবুক এপ কিংবা ব্রাউজারে লগ ইন করুন।
২. লগ ইন করার পর আপনাদের সামনে একটি পেজ আসবে সেখানে লেখা থাকবে, আপনার আইডি ডিজেবল করা হয়েছে। তো আপনি সেদিকে না তাকিয়ে নিচের দিকে দেখবেন লেখা আছে Request A Review সেখানে ক্লিক দিবেন।
৩. এবার আপনাকে বলবে একটি নাম্বার/ইমেইল ফেসবুক আইডিতে এড করতে। যদি আগে থেকে কোনো ইমেইল বা ফোন নাম্বার এড করা থাকে তাহলে এটা নাও বলতে পারে।
৪. তো আগে থেকে এড থাকুক বা আপনি পরে এড করে সমস্যা নাই, যেটা এড করবেন সেখানে একটি কোড যাবে, কোড দিয়ে আইডি ভেরিফাই করে নিবেন।
৫. মোবাইল নাম্বার দিয়ে ভেরিফাই হয়ে গেলে আপনাকে বলবে আপনার পরিচয় ভেরিফাই করতে, এর জন্য আপনাকে আপনার সম্পর্কে একটি ডকুমেন্ট এড করতে হবে সেখানে। ডকুমেন্ট গুলো যা যা হতে পারে তা নিচে বলা হলো,
• জন্ম নিবন্ধন
• পাসপোর্ট
• ভোটার কার্ড
• ব্যক্তিগত ইন্সুরেন্স কার্ড
• বিবাহ সার্টিফিকেট
• সরকার অনুমোদিত কোনো ডকুমেন্ট, যেখানে আপনার নাম ও ছবি আছে।
এখন অনেক বাচ্চারাও মানে ১৮ বছরের নিচে যারা তারাও ফেসবুক ব্যবহার করে। তাদের তো আর উপরের কিছু থাকবে না তারা নিচে বলা জিনিস গুলো ব্যবহার করতে পারে,
• জন্ম নিবন্ধন
• স্কুল আইডি কার্ড
• লাইব্রেরি কার্ড
• ক্রেডিট কার্ড বা চেক
• স্কুল বাস কার্ড
৬. এখান থেকে যেকোনো একটি ডকুমেন্টের ছবি তুলে আপলোড করে দিন সেখানে।
৭. আপলোড হয়ে গেলে, ফেসবুক আপনাকে জানাবে আপনার রিভিউ রিকুয়েস্ট তারা পেয়েছে, তারা সেটাকে রিভিউ করে আপনাকে জানাবে।
সাধারণত ফেসবুক এই রিভিউ এর কাজ ৪-৫ দিন সময় নেয়। যদি সব তথ্য সঠিক থাকে তাহলে ফেসবুক আইডি আন ডিজেবল করে দেয়। আর ভুল হলে আইডি চিরতরে ডিলিট করে দেয়। তখন চাইলেও আর ফিরিয়ে আনা যায় না।
তো প্রিয় ভিজিটর আশা করছি আপনাদের কাছে আজকের এই পোস্ট টি ভালো লেগেছে। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কিন্তু কমেন্ট করে জানাবেন। এবং আমাদের সাইটে এরকম আরো অনেক হেল্পফুল পোস্ট রয়েছে সেগুলো পড়তে চাইলে আমাদের সাইট টি একবার ভিজিট করুন। আর আজকের মতো এখানেই বিদায়, ভালো থাকবেন সুস্থ্য থাকবেন।