পিজি হাসপাতাল অনলাইন টিকিট বুকিং দেওয়ার নিয়ম

পিজি হাসপাতাল অনলাইন টিকিট বুকিং দেওয়ার নিয়ম

পিজি হাসপাতাল

সুপ্রিয় পাঠক । আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ।‌ আশা করছি সকলে ভালো আছেন । আপনাদের ভালো এবং সুস্থ থাকার কামনা করে আরম্ভ করছে আজকের আলোচনা । আজকের বিষয় পিজি হাসপাতালে অনলাইন টিকিট বুকিং দেওয়ার নিয়ম।
উত্তর নিয়ম জানানোর পাশাপাশি পিজি হাসপাতাল সম্পর্কে প্রয়োজনীয় পয়েন্টগুলো উল্লেখ করবো ইনশাআল্লাহ। আর এসব জানতে আপনাদের পুরো লেখাটি পড়তে হবে । সুতরাং এবার পড়া শুরু করুন ‌।

অনলাইন টিকেট বুকিং এর প্রয়োজনীয়তা:

নানারকম বিপদ আপদ ,রোগ ব্যাধি ও বালা মুসিবত মানুষের প্রায় নিত্য সঙ্গী । এগুলো থেকে পরিত্রাণের জন্য যথাসময়ে চিকিৎসার প্রয়োজন । আর চিকিৎসার জন্য অবশ্যই হাজির হতে হয় হাসপাতালে । এক্ষেত্রে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয় । যেমন নির্ধারিত গন্তব্য থেকে এসে নির্ধারিত হাসপাতালে হাজির হওয়া ,টিকিটের জন্য লাইন ধরা , রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ইত্যাদি ।
এসব করতে করতে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে রোগীর আত্মীয়-স্বজনদের । আর যদি আত্মীয়-স্বজন ছাড়াই রোগী নিজে আসে তাহলে তো তার অবস্থা তো আরো শোচনীয় ।

এখন প্রযুক্তির উত্তরাধুনিক যুগ ‌। দিন বদলের এই সময়ে অনলাইন টিকিট বুকিং যুক্ত হয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । এর মাধ্যমে অল্প সময়ের মধ্যেই টাকা পয়সা ছাড়াই দ্রুত কাঙ্খিত সেবা পাওয়া যায় । তাই আপাতত অনলাইন টিকিট বুকিং এর বিকল্প কিছু নেই । আর হ্যাঁ পিজি হাসপাতাল সরকারি হওয়ায় এখানে বিজ্ঞ-বিজ্ঞ ডাক্তারের আনাগোনা । তাদের থেকে অল্প টাকায় চিকিৎসা গ্রহণ করে সুস্থ হচ্ছে হাজার লাখো মানুষ । তাই অন্য সব হাসপাতাল থেকে এই হাসপাতালে ভিড় তুলনামূলক বেশি । ঝামেলার পাহাড় ডিঙ্গাতে ঘরে বসে অনলাইন টিকিট করুন । এবার আপনাদের টিকিট সংক্রান্ত নিয়ম জানাচ্ছি।

পিজি হাসপাতালে অনলাইন টিকিট বুকিং করার নিয়ম:

প্রথমে আপনারা আপনার হাতের কাছে থাকা স্মার্টফোন অথবা ল্যাপটপ -কম্পিউটার থেকে এই www.wbhealth.gov.in‌ ওয়েবসাইটের এড্রেস লিখে সার্চ করুন ।
এরপরে আপনারা অনলাইন টিকিট বুকিং অপশনটির ওপরে ক্লিক করুন । ক্লিক করার সঙ্গে সঙ্গে একটি ইন্টারফেস চলে আসবে ‌। তাতে লেখা থাকবে online ticket booking / online test report

আপনারা তখন online ticket booking এ ক্লিক করে আপনাদের মোবাইল নাম্বার দিয়ে মোবাইল নাম্বারটি ভেরিফিকেশন করে নিবেন ।

সেখানে ইনফরমেশন গুলো দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা সম্পন্ন হয়ে গেলে সেখান থেকে খুব সহজে অনলাইনে পিজি হাসপাতালে টিকিট বুকিং করতে পারবেন । ( সম্ভব না হলে কমেন্ট করুন । অন্য লিংক দিয়ে দেব )

এভাবে আপনারা ঘরে বসে টিকেট বুকিং দিতে সক্ষম হবেন । সরাসরি টিকিট সংগ্রহের টাকা লাগলেও অনলাইনে টিকিট বুকিং এর ক্ষেত্রে কোন টাকা প্রদান করতে হয় না ।

পিজি হাসপাতালে অনলাইন টিকিট বুকিং এরপর করণীয়:

পিজি হাসপাতালে অনলাইনের মাধ্যমে টিকিট বুকিং করা হয়ে গেলে আপনাদের করণীয় হচ্ছে সাধারণ আউটডোর টিকিট কেটে তা জমা দিতে হবে নির্দিষ্ট কাউন্টারে । সেখানে বারকোড স্ক্যান করে আপনাদের টিকেট তারা কনফার্ম করে দিবে । এই টিকেট নিয়ে সরাসরি ডাক্তার দেখানোর সুযোগ পাবেন । প্রতিটা রোগী স্ক্যানিং এর জন্য জনসাধারণের পিছনে অপেক্ষা করার কোন প্রয়োজন থাকবে না ।

পিজি হাসপাতাল কোথায়:

পিজি হাসপাতাল কোথায়

পিজি হাসপাতাল নামে পরিচিতি ও প্রসিদ্ধি লাভ করলেও এর মূল নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।‌ বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার আগে এর নাম ছিল ইনস্টিটিউট অফ পোস্ট গ্রাজুয়েট মেডিসিন এন্ড রিসার্চ। এটি ঢাকার শাহবাগে অবস্থিত । বাংলাদেশের যে কোন প্রান্ত থেকে এখানে আসা যায় । না চিনলে গুগল ম্যাপ ব্যবহার করে আসা যায়। অথবা ঢাকায় অবস্থিত ট্রাফিক পুলিশ বা বিশ্বস্ত কোনো ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করলে সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে । পিজি হাসপাতালে ওয়েব সাইট লিঙ্ক –bsmmu.edu.bd

পিজি হাসপাতালের মোবাইল নাম্বার:

পেজে হাসপাতালে ঠিকানা দেওয়ার পরেও যদি কারো আসতে কোন প্রবলেম হয় ‌ কিংবা সরাসরি পিজি হাসপাতালে কন্টাক্ট করতে চান তাহলে এই নাম্বার গুলো নোট করুন। প্রয়োজন মতো কল করুন ।
ফোন: + 8-02-961051-58, + 8-02-961058-60, + 6-02-614545-49 + 6-02-612550-54

পিজি হাসপাতাল কবে কখন বন্ধ/ ছুটি থাকে ?

সাধারণত শুক্রবারে বাংলাদেশের সব সরকারি হাসপাতাল বন্ধ থাকে । সে ক্ষেত্রে শুক্রবারেও পিজি হাসপাতাল তাদের চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখে । তবে জরুরী বিভাগটি সপ্তাহে ৭ দিনের প্রত্যেক দিন ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে । রোগীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা হাসপাতাল সব সময় পাশে আছে । সেজন্য শুক্রবার এখানে আসা যেকোনো রোগী নিঃসন্দেহে এখানে সেবা নিতে পারবেন । তবে শুক্রবার ছুটিতে থাকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসাকরা । তাই শুক্রবার বাদে সপ্তাহে ছয় দিন আসলে খুব ভালো রেজাল্ট পাওয়া যাবে ।
তাছাড়া পিজি হাসপাতাল সাধারণত সরকারি ছুটির দিনে বন্ধ থাকে । শুক্রবারে ও অফিসিয়াল কার্যক্রম বন্ধ থাকে । কিন্তু ইমারজেন্সি বিভাগ ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে ।

পিজি হাসপাতালের ডাক্তারদের তালিকা:

মেডিসিন বিভাগ:

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ প্রধানত তিনজন । তাদের নাম-
১. সোহেল মাহমুদ আরাফাত
প্রফেসর,এন্টারনাল মেডিসিন বিভাগ ।
ইমেইল: [email protected]

২. মোঃ আবুল কালাম আজাদ
প্রফেসর,ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগ ।
ইমেইল: [email protected]

৩. সুনীল কুমার বিশ্বাস
প্রফেসর ,ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগ।
ইমেইল: [email protected]

নিউরো মেডিসিন বিভাগ:

১. ডা: মোঃ তসলিম উদ্দিন
অধ্যাপক, শারীরিক চিকিৎসা ও পুনর্বাসন বিভাগ ।
ইমেল: [email protected]

২. ডাঃ মোঃ শহিদুর রহমান
প্রফেসর, শারীরিক ঔষধ ও পুনর্বাসন বিভাগ ।
ইমেল: [email protected]

পিজি হাসপাতাল ডাক্তারদের তালিকা
কিডনি বিভাগ :

ডাঃ মোঃ আনোয়ারুল কবির
অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগ
ইমেল: [email protected]

থাইরয়েড হরমোন এবং ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ:

মোহাম্মদ আবুল হাসনাত
অধ্যাপক এবং বিভাগীয় প্রধান ,এন্ডোক্রিনোলজি এবং মেটাবলিজম বিভাগ
ইমেইল: [email protected]

চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগ:

ডাঃ মোঃ কামরুল হাসান জয়গিদার
অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, চর্মরোগ ও ভ্যানেরোলজি বিভাগ।

লিভার বিভাগ :

আইয়ুব আল মামুন

অধ্যাপক,হেপাটোলজি বিভাগ ।
ইমেল: [email protected]

এছাড়াও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, সার্জারি বিশেষজ্ঞ,জেনারেল সার্জারি বিশেষজ্ঞ, হাত জোড়া ,পা ব্যথা ও পঙ্গু বিশেষজ্ঞ , চক্ষু বিশেষজ্ঞ ,নাক কান ও গলা বিশেষজ্ঞ , নিউরোসার্জন বিশেষজ্ঞ ,কিডনি মূত্রনালী ও যৌনাঙ্গ রোগ বিশেষজ্ঞ , বার্ণ -প্লাস্টিক ও কসমেটিক বিশেষজ্ঞ , শিশু ও সার্জন বিশেষজ্ঞ , প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ , নবজাতক ও শিশু বিশেষজ্ঞ, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, মুখ ও দন্ত বিশেষজ্ঞসহ যাবতীয় রোগ বিভাগের ডাক্তার পাওয়া যায় ।

আরো পড়ুনঃ বাংলাতে বায়োডাটা লেখার নিয়ম

পিজি হাসপাতালে কেবিন ভাড়া কত ?

পিজি হাসপাতাল বাংলাদেশের অন্য সকল সরকারি মেডিকেল কলেজ গুলোর মতো নয় । এখানে চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি বেডরুম ও উন্নত । অন্য সরকারি মেডিকেলগুলোতে বেড ছাড়া ফ্লোরে কিংবা বারান্দায় ও রোগী দেখে চিকিৎসা করানো হয় । কিন্তু পিজি হাসপাতালে এরকম করা হয় না । এখানে বরাদ্দকৃত সিটের বাইরে কোন রোগী ভর্তি করানো হয় না অর্থাৎ ভালো চিকিৎসা দেওয়ার জন্য হাসপাতালের বরাদ্দ ি
সিটের বাইরে কাউকে ভর্তি করানো হয় না ।

পিজি হাসপাতালে মূলত চার ধরনের সিট আছে:

১. জেনারেল ওয়ার্ড
জেনারেল ওয়ার্ড হচ্ছে যেখানে সাত থেকে দশটি বেড থাকে । এ ধরনের সিটের ভাড়া প্রতিদিন ৬০০ টাকা।

২.ডাবল বেড কাবিন
ডাবল বেড কেবিন হচ্ছে এরকম রুম যেখানে মাত্র দুইটি রোগীর সীট থাকে । এক্ষেত্রে রোগীর বেড ছাড়াও বসার জন্য প্রশস্ত জায়গা থাকে । এ ধরনের সিট ভাড়া দিনে ১০২৫ টাকা।

৩. কেবিন

কেবিন হচ্ছে যেখানে একটি মাত্র সিট থাকে । রোগীর বেড ছাড়াও রোগীদের জন্য আলাদা লকার, আত্মীয়দের বসার জন্য প্রশস্ত জায়গা রয়েছে । এরকম কেবিনের ভাড়া দৈনিক ২০৫০ টাকা।

৪.ডিলাক্স রুম
ডিলাক্সে রুম হচ্ছে কেবিনের চেয়ে আরো উন্নত । আরো প্রশস্ত । আরো সুন্দর । এর প্রতিদিন ভাড়া ৩ হাজার টাকার মধ্যে ।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:
রোগীর কন্ডিশন অনুযায়ী ডাক্তারগণ রুমের রেফার করে থাকেন। এবং রোগীর অবস্থা অনুযায়ী চিকিৎসা চলে । আত্মীয়-স্বজন চাইলেই ইচ্ছামত রুম পাবে না ।

পিজিতে দালাল থেকে সাবধান

পিজিতে অসংখ্য দালাল রয়েছে । দালাল নেটওয়ার্কে ঘেরা পুরো এড়িয়া । তাদের থেকে সাবধান হতে হবে । নইলে যখন তখন মূল্যবান জিনিস সামগ্রী এবং টাকা-পয়সা খোয়াতে হবে । তাই সকলের সতর্ক থাকা উচিত।

শেষকথাঃ

প্রিয় ভিজিটর আশা করছি আজকের পোষ্ট আপনাদের ভালো লেগেছে । এরকম আরো ভালো ভালো তথ্যবহুল পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন ।

ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন । এই প্রত্যাশা ।